কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে তারাপীঠ এ ভক্তের ঢল
অরবিন্দ মণ্ডল, তারাপীঠ: করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশিকা মেনে পর পর ২ বছর বন্ধ রাখা হয়েছিল তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যা । এই বছর কৌশিকী অমাবস্যা হবে কি না, তা নিয়েও প্রথম থেকেই চিন্তায় ছিল তারাপীঠ এলাকার মানুষজন । তবে সরকার এবং প্রশাসনের নির্দেশে এই বছর কৌশিকী অমাবস্যা হচ্ছে । আজ দুপুর একটা থেকে শুরু হয়েছে কৌশিকী আমাবস্যা । প্রায় পাঁচ থেকে সাত লক্ষ ভক্তের ভিড় হবে বলে আশাবাদী তারাপীঠ মন্দির কমিটির সদস্যরা । আগত লক্ষ লক্ষ ভক্তের ভিড় সামাল দিতে ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি । বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার । ব্যারিকেড করে ঘিরে ফেলা হয়েছ তারাপীঠ চত্বর । আজ থেকেই মোতায়েন বিরাট পুলিশ বাহিনী । মন্দির চত্বরে লাগানো হয়েছে বিশাল আকারের জায়েন্ট স্কিন । তাতেই সারাদিন ধরে পুজো দেখা যাবে ।
কৌশিকী অমাবস্যায় জমজমাট তারাপীঠ কথিত আছে, অসুরের অত্যাচার থেকে উদ্ধারের জন্য স্বর্গের দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন । আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে মহামায়া দেবী মানস সরোবরের জলে স্নান করে কালো রং ত্যাগ করে কৃষ্ণবর্ণা দেবী কৌশিকীর রূপ ধারণ করেন । সেই রূপেই দেবী শুম্ভ-নিশুম্ভ নামের দুই অসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন এই তিথিতেই । সেই থেকেই পাপের বিনাশ করার জন্য তারাপীঠ-সহ নানান পীঠস্থানে কৌশিকী রূপে পুজো করা হয় মা কে । কৌশিকী অমাবস্যার অর্থ হল তারা নিশি । এই তিথি তন্ত্র সাধনার এক বিশেষ রাত ।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "অমাবস্যার এই বিশেষ তিথিতে সাধক বামা ক্ষ্যাপা তারাপীঠের মহাশ্মশানের শিমূল গাছের তলায় মা তারার আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন । মনে করা হয়, বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো করলে সকল মনের ইচ্ছে পূরণ হয় । তাই কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে হাজার হাজার পুণ্যার্থী আসেন মায়ের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য ।"
অমাবস্যা শুরু হলেই তারাপীঠের শ্মশান এক অন্য রূপ নেয় । তন্ত্র শাস্ত্রের ব্যাখা অনুযায়ী, এই তিথিতে মা তারার পুজো দিয়ে দ্বারকা নদীতে স্নান করলে শত জন্মের পুন্যলাভ হয় । আর এই কারণেই তারাপীঠে এই তিথিতে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ পুজোর ।তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, "২ বছর বন্ধ ছিল । তাই এই বছর ভিড় উপচে পড়বে । যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য প্রশাসন ও মন্দির কমিটি যৌথভাবে কাজ করছে ।" ব্যাবসায়ী রনি হাজরা, দুলাল মণ্ডল জানান, ২ বছর করোনার জন্য খুব কষ্টে কাটিয়েছি । আশা করি এবার ভালো উপার্জন হবে ।"
Comments
Post a Comment